স্বদেশ ডেস্ক:
অক্টোবরে অস্ট্রেলিয়ায় শুরু হতে যাওয়া অষ্টম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপকে সামনে রেখে এখন থেকেই প্রস্তুতি শুরু করতে যাচ্ছে ভারত ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
আগামীকাল থেকে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে মুখোমুখি হচ্ছে ভারত ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এই সিরিজ দিয়ে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি শুরু করছে দু’দল।
কোলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায়।
কেবলই তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ শেষ করেছে ভারত ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ভারতের কাছে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে ক্যারিবীয়রা। তিন ম্যাচের একটিতেও ভাল পারফরমেন্স দেখাতে পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
সিরিজে ভারতের ব্যাটারদের পারফরমেন্সও আশানুরূপ ছিলো না। ব্যাটাররা নিজেদের মেলে ধরতে পারেনি। সিরিজে কোনো ভারতীয় ব্যাটারের সেঞ্চুরি নেই।
অন্যদিকে বোলারদের পারফরমেন্স ছিলো উল্লেখ করার মতো। সিরিজের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী ভারতের পেসার প্রসিধ কৃষ্ণ। ৩ ম্যাচে ৯ উইকেট নিয়েছেন তিনি। এছাড়া মোহাম্মদ সিরাজ ও যুজবেন্দ্রা চাহাল ৫টি করে উইকেট নেন।
তবে সবকিছুর উর্ধ্বে ভারতের চিন্তার কারণ দলের সেরা ব্যাটার বিরাট কোহলির ফর্ম। ২০১৯ সালের নভেম্বর থেকে সেঞ্চুরি নেই কোহলির। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে ৩ ইনিংসে ২৬ রান করেছেন কোহলি।
এসব সত্ত্বেও কোহলির ফর্ম নিয়ে মোটেও চিন্তিত নন ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মা ও টিম ম্যানেজমেন্ট। তারপরও রানের ক্ষুধায় ক্ষুধার্ত কোহলি। সর্বশেষ ইডেনের মাঠে টেস্টে বাংলাদেশের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছিলেন কোহলি।
এবার সেঞ্চুরি খড়া কাটবে কোহলির! ইডেনে আলাদাভাবে ঘাম ঝড়িয়েছেন তিনি। থ্রো-ডাউন বিশেষজ্ঞ ও দীপক চাহারকে নিয়ে নেটে আলাদা দীর্ঘ সময় অনুশীলন করেছেন কোহলি।
কোহলির ব্যাপারে ব্যাটিং কোচ বিক্রম রাঠোর বলেন, ‘কোহলি খারাপ অবস্থায় আছে- এটা বলা যায় না। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ান ডে সিরিজে রান পায়নি ঠিকই, তবে নেটে খুব ভাল ব্যাট করছে সে। ছন্দে ফেরার মরিয়া চেষ্টা করছে। আমি নিশ্চিত আসন্ন সিরিজে যে কোনো একটি ম্যাচে বড় রান পাবে কোহলি।’
বিশ্বকাপের কথা মাথায় নিয়েই দল টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু করছে জানিয়ে রাঠোর বলেন, ‘এ বছরই আরেকটি বিশ্বকাপ। তাই আমরা বিশ্বকাপকে সামনে রেখেই নিজেদের পরিকল্পনাগুলো সাজাচ্ছি। এই সিরিজ দিয়ে পরিকল্পনাগুলো শুরু হচ্ছে।’
অন্যদিকে ওয়ানডে সিরিজ হারলেও, টি-টোয়েন্টিতে ঘুড়ে দাঁড়াতে বদ্ধপরিকর ওয়েস্ট ইন্ডিজ। নেটে অনুশীলনে ব্যাট-বল হাতে নিজেদের ঝালিয়ে নিয়েছেন ক্রিকেটাররা।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটারদের পারফরমেন্স মোটেও ভালো ছিলো না। তিন ম্যাচের কোনোটিতেই পুরো ৫০ ওভার ব্যাট করতে পারেননি তারা। আর কোনো ম্যাচেই দলীয় স্কোর দু’ শ’ অতিক্রম করেনি ক্যারিবীয়দের। তাই ব্যাটারদের নিয়ে আলাদা সময় পার করেছেন কোচ ফিল সিমন্স।
অনুশীলন শেষে সিমন্স বলেন, ‘ব্যাটারদের আলাদা সময় দিতে হয়েছে। ওয়ানডেতে তারা বড় ইনিংস খেলতে পারেনি। তবে টি-টোয়েন্টিতে ব্যাটাররা ভালো করার বিষয়ে আশাবাদী। এই ফরম্যাটে আমাদের দলে বেশ কিছু ভালো ব্যাটাররা আছে, যারা যেকোনো সময় ম্যাচের চিত্র বদলে দিতে পারে। তেমন কিছুর প্রত্যাশাই করছি। আর সামনের বিশ্বকাপের কথাও মাথায় রাখতে হবে। এখন থেকেই দলকে ভালোভাবে গোছাতে হবে।’
গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভ থেকে মিশন শেষ করেছিলো ভারত ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বিশ্বকাপের পরই ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ ৩-০ ব্যবধানে জিতেছিলো ভারত। আর পাকিস্তানের মাটিতে তিন ম্যাচের সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হলেও, ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের সিরিজ ৩-২ ব্যবধানে জিতেছিলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
তবে ভারতের বিপক্ষে সর্বশেষ তিন সিরিজের তিনটিই হেরেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। মুখোমুখি লড়াইয়েও ভারতের চেয়ে পিছিয়ে ক্যারিবীয়রা। ১৭ ম্যাচের মধ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয় ৬টি, ভারতের জয় ১০টি ও ১টি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়।
ভারতের দল
রোহিত শর্মা (অধিনায়ক), ইশান কিশান, বিরাট কোহলি, শ্রেয়াস আইয়ার, সূর্যকুমার যাদব, ঋসভ পান্থ, রুতুরাজ গায়কোয়াড়, ভেঙ্কটেশ আইয়ার, দীপক চাহার, শারদুল ঠাকুর, রবি বিষ্ণোই, অক্ষর প্যাটেল, যুজববেন্দ্রা চাহাল, কুলদীপ যাদব, মোহাম্মদ সিরাজ, ভুবনেশ্বর কুমার, আবেশ খান, হর্ষল প্যাটেল।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল
কাইরন পোলার্ড (অধিনায়ক), নিকোলাস পুরান, ফ্যাবিয়ান অ্যালেন, ড্যারেন ব্রাভো, রোস্টন চেজ, শেল্ডন কটরেল, ডমিনিক ড্রেকস, জেসন হোল্ডার, শাই হোপ, আকিল হোসেন, ব্রান্ডন কিং, রোভম্যান পাওয়েল, রোমারিও শেফার্ড, ওডেন স্মিথ, কাইল মায়ার্স ও হেইডেন ওয়ালশ জুনিয়র।
সূত্র : বাসস